ইহরাম অবস্থায় যেসব ভুলের জন্য দম কাফফারা দিতে হয়

ইহরাম অবস্থায় যেসব ভুলের জন্য দম দিতে হয়

হজ্ব বা উমরাহর ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ কাজ করলে অথবা হজ্ব বা উমরাহর ওয়াজিব আ’মল ছুটে গেলে পশু জবাইয়ের মাধ্যমে যে কাফ্ফারা আদায় করা হয় তাকে ‘দম’ বলে। দম মক্কায় বা মীনায় অবস্থানকালে আদায় করতে হয়। যদি কেউ টাকার অভাবে অথবা সময়ের অভাবে মীনা বা মক্কায় দম আদায় করতে না পারে তাহলে তাকে দেশে ফিরে দমের পশুর সমপরিমাণের টাকা গরীব-মিসকিনদের মধ্যে বিতরণ করে দিতে হবে এবং আল্লহর নিকট ক্ষমা চাইতে হবে।

একটি ছাগল/ভেড়া/দুম্বা বা একটি গরু/মহিষ/উটের এক সপ্তাংশের দ্বারা দম আদায় করা যায়। দম দাতা দমের পশুর মাংস খেতে পারবে না। সম্পূর্ণ মাংস গরীব-মিসকীনদের মধ্যে সদাকাহ্ করে দিতে হবে (হেদায়া ওয়ান নেহায়াঃ ১/২৬৬)।

ক। ইহরাম অবস্থায় অথবা হজ্ব/উমরাহ্ করার সময় যে সকল বিধি লঙ্ঘন করলে দম ওয়াজিব হয় সেগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ

(১) ইহরাম ব্যতীত মীকাত অতিক্রম করলে;

(২) হজ্বের বা উমরাহর কোনো ওয়াজিব আমল ছেড়ে দিলে/ছুটে গেলে;

(৩) পুরুষ মুহরিম পুরোদিন সেলাই করা পোশাক পরে থাকলে;

(৪) পুরুষ মুহরিম সারাদিন মাথা ঢেকে রাখলে;

(৫) ইহরাম অবস্থায় স্ত্রীকে চুমু দিলে বা যৌন উত্তেজনাসহ স্পর্শ করলে;

(৬) মাথা মুন্ডানোর পর তওয়াফে যিয়ারতের পূর্বে স্ত্রী সহবাস করলে;

(৭) বিনা উজুতে তওয়াফে যিয়ারতের পূর্ণ ৭টি চক্কর বা অধিকাংশ চক্কর সম্পন্ন করলে;

(৮) তওয়াফে যিয়ারতের শেষের ৩ চক্কর বা তার কম ছেড়ে দিলে;

(৯) হারাম এলাকায় কোনো জীব-যন্তু শিকার করলে বা শিকারীকে সাহায্য করলে;

(১০) হজ্বের সাথীদের সাথে তুমুল ঝগড়া/মারামারি করলে;

(১১) ক্বিরান হজ্বকারী দ্বারা যদি উপরে বর্ণিত কাজগুলো সংগঠিত হয় তাহলে প্রত্যেক ভুলের জন্য তাঁর উপর ২টি দম ওয়াজিব হবে, কারণ সে হজ্ব ও উমরাহর ইহরাম একসাথে বেঁধেছে (হেদায়া ওয়ান নেহায়াঃ ১/২৮৭, ফাতহুল কাদীর ঃ ৬/৫৩)

খ। যে সকল বিধি লঙ্ঘন করলে গরু, মহিষ ও উট জবাই করা ওয়াজিব হয়ঃ

(১) অপবিত্র অবস্থায় তওয়াফে যিয়ারত করলে;

(২) ফরজ তওয়াফ, ওয়াজিব সায়ী সমাপ্ত করে পূর্ণ হালাল হওয়ার পূর্বে স্ত্রী সহবাস করলে;

(৩) মহিলাদের হায়েজ হওয়ার কারণে তওয়াফে যিয়ারত আদায় করতে না পারলে;

গ। উপরে উল্লিখিত ভুল-ভ্রান্তি ছাড়াও আরো অনেক ধরনের ছোট ছোট ভুল-ভ্রান্তি বা গুনাহের কাজ সংঘঠিত হয়ে গেলে কিছু টাকা গরীব-মিসকিনদের মধ্যে দান করে দিলেই কাফ্ফারা আদায় হয়ে যাবে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url