যমযম কূপ ও দুআ

যমযম কূপ ও দুআ’

১। মাকামে ইব্রাহীমের পেছনে নামাজ ও দুআ’ শেষ করে কাল বিলম্ব না করে সাফা পাহাড়ের দিকে গিয়ে মাসজিদুল হারামের দেয়ালে যম্ যম্ পানির যে ট্যাপ/কল লাগানো আছে, সেখানে গিয়ে যম্ যম্ কূপের পবিত্র পানি পান করুন। ভিড়ের জন্য যদি কল থেকে পানি নেয়া সম্ভব না হয় তা হলে আশেপাশে রাখা কন্টেইনার থেকে পানি পান করুন এবং এ দুআ’ পড়ূন। 

হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস (রাঃ) যমযম এর পানি পান করে এ দুআ’ করেছিলেন।

অর্থ: ‘হে আল্লহ ! আমি তোমার কাছে উপকারী জ্ঞান, পর্যাপ্ত রিযিক ও সকল প্রকার রোগ থেকে আরোগ্য কামনা করছি।’ (দারে কুতনী, মুস্তাদ্রাকহাকেম: ৪৭৩/১)। এরপর:- 

শুধু বিসমিল্লাহি ওয়ালিল্লাহিল হাম্দ বলে ৩ চুমুকে পানি পান করা সুন্নাত। বাইতুল্লাহ্ মুখী হয়ে এবং দাঁড়িয়ে পানি পান করা মুস্তাহাব। যমযমের পানি দিয়ে মুখ ধোয়া যায়, মাথায় ব্যবহার করা যায় এবং উজুও করা যায়। প্রাণ ভরে বরকতময় পানি পান করুন, যত ইচছা পান করুন, কোনো বাধা নেই। এ বরকতময় পানি যত পান করবেন ততই ভাল লাগবে, ততই উপকার হবে। এ পানি সকল রোগমুক্তির জন্য এক মহাঔষধ।

২। পানি পান করে সম্ভব হলে পুনরায় হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করে (৮ম বার) কাল বিলম্ব না করে সায়ী করার উদ্দেশ্যে সাফা পাহাড়ের দিকে রওয়ানা হতে হবে। কা’বা শরীফ থেকে দক্ষিণ-পূর্ব কোণের দিকে সাফা পাহাড় আনুমানিক ৭০/৮০ মিটার দূরে অবস্থিত।

বিঃ দ্রঃ

(১) তওয়াফ করার সুবিধার্থে বর্তমানে যমযম কূপে নামার সিঁড়ি স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তাই কূপও দেখা যায় না এবং সেখানে পানিও পান করা যায় না। তবে যমযমের পানি পান করার জন্য ট্যাপের এবং পানির কন্টেইনারের মাধ্যমে বিকল্প ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাই সেখানে গিয়ে পানি পান করুন এবং দুআ’ করুন। 

এ পানি এতোই পবিত্র যে হুজুর (সঃ)-এর শিশুকালে মা হালিমার ঘরে থাকাকালে যখন ‘সিনাচাক্’ (বক্ষ বিদারণ) করা হয়েছিল, তখন জিবরাঈল (আঃ) বেহেশতের পানি ব্যবহার না করে যম্ যম্ এর পানি দ্বারা সব কিছু ধৌত করেছিলেন বলে জানা যায়।

(২) এখানে উল্লেখ্য যে, মক্কায় মাসজিদুল হারামে ও মদীনায় মাসজিদুন নববীতে যমযমের ঠান্ডা ও নরমাল পানির ব্যবস্থা আছে। অতিমাত্রায় ঠান্ডা পানি পান করলে জ্বর-সর্দি- কাশিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অতএব অতি মাত্রায় ঠান্ডা পানি পান না করে, নরমাল পানি পান করুন অথবা ঠান্ডা-নরমাল পানি মিলিয়ে পান করুন।

(৩) পবিত্র যমযমের ইতিহাস, তাৎপর্য ও গুরুত্ব, ঐতিহাসিক পটভুমি ইত্যাদি সম্বন্ধে অবগত হওয়ার জন্য মদীনা পাবলিকেশন্স-এর ‘পবিত্র যমযম’ অ্যালবামটি অবশ্যই পড়ূন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url